“সেদিন বিকেলবেলা স্কুল থেকে ফিরছি-একাই।ছাতা নিয়ে যেতে ভুলে গেছিলাম।তাই বেশ জোরেই পা চালিয়েছি। বাড়ি থেকে স্কুল বেশি দূর না যদিও-কিন্তু রাস্তা প্রায় ফাঁকা। রাস্তার শেষ মোড়টার কাছে এসছি যখন, দেখি পাশে দাঁড় করানো টোটোটার ভেতর তিনটে মেয়ে বসে, দিদি বলাই ভালো। চিনি ওদের,প্রায়ই থাকে এখানে। ওদের পাশ দিয়ে যেতেই ভয় করে আমার,কি সব বলে ওরা। আমি গতি বাড়িয়ে সবে টোটোটা পেরিয়েছি, হটাত একটা মেয়ে উঠে এসে আমার হাত ধরল।

আমি চমকে উঠে ঘুরে তাকাতেই দেখি বাকি দুজনও বেরিয়ে এসছে।বৃষ্টিটা একটু ধরে এসছে তখন।এতদিন ওরা শুধু টোন্টিং করত,কোনোদিন গায়ে হাত দেয়নি।আমি এতটায় ভয় পেয়েগেছিলাম যে গলা দিয়ে এতটুকুও আওয়াজ বেরচ্ছিলনা। হাতটা ছাড়ানোর জন্যে একটু টান দিয়েছি,ওমনি মেয়েটা বলে উঠল,’এত তাড়া কিসের গো? এমন সুন্দর বডি বানিয়েছ, এমন সুন্দর দাড়ি, এমন বাইসেপ্স-আমাদেরও একটু ছোঁয়া দাও।’
আমি কোনমতে কাঁপা গলায় বললাম,’আমায় ছেড়ে দাও দিদি, প্লিজ’
পেছনের মেয়েটা তখন বলে উঠল,’তোমায় ছাড়লে হয় সোনাবাবু? পাড়ায় এত ছেলে, সকাল বিকেল সবগুলোকেই দেখি, কিন্তু এমন হ্যান্ডি ফিগার তো একটাই আছে’
আমার চোখ দিয়ে জল পড়তে লেগেছে ততখনে, তাই দেখে হাত ধরে থাকা দিদিটা বলে উঠল,’একি?কাঁদছ কেন? আমরা কি কিছু করেছি তোমায়? বৃষ্টিতে ভিজে আরও সেক্সি লাগছ যে, সামলানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে সোনা, সিক্স প্যাকটা তো পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।’
আমি তখন কোনোমতে হাত টা ছাড়িয়ে আর কোনোদিকে না তাকিয়ে উল্টোদিকে ছুটতে লেগেছি। পেছন থেকে ওদেরই কেউ একজন বলল,’আরে চললে কোথায়? রাতের রেটটা তো বলে যাও হিরো”…
এতটুকু পড়ে রিভু বলে উঠল,”এটা কি লিখেছিস পাগলা? খেপে টেপে গেছিস নাকি?”

-“কেন? কি হল?”

-“মেয়েরা একটা ছেলেকে টোন্টিং করছে? হাত ধরছে? এমনটা হয় কখনও?”

-“তা কেমন টা হয় শুনি?”

-“ছেলেরা মেয়েদের সাথে এমন করে”

-“কত গর্বের কথা বল?”

রিভুর মুখটা কালো হয়ে গেল শুনেই।

তাই সেই সমস্ত ছেলেদের বলি, যারা রাস্তায় এমনটা করে নিজেদের ‪#‎পুরুষ ভাবে —দয়া করে এমনটা করে আমাদের মাথাটা সমাজে আর নামিয়ে দিসনা।

 

~ লজ্জা করে ~

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleপৃথিবী মথন
Next articleচাটনি
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments